নিজস্ব প্রতিবেদক
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর আরোপিত ভ্যাট কমানো হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। শুক্রবার সকালে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নতুন অর্থ বছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর যে সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করা হবে না। নিয়ম অনুযায়ী ভ্যাট দিতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর ভ্যাট আরোপের প্রস্তাবের পর থেকে বিরোধিতা করে আসছে শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, অথচ সরকার এতে ভ্যাট আরোপ করছে। এর প্রতিবাদে নানা কর্মসূচিও পালন করছে আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, ভ্যাট আরোপ করায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই অযুহাতে দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা আদায় করবে। শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির মধ্যে ঠেলে দেয়া মোটেও কোনো যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
বর্তমানে সাড়ে চার লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়ন করছে এবং এসব শিক্ষার্থীর শতকরা ৭০ ভাগই নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরই শিক্ষার সব ব্যয়ভার বহন করতে হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ থাকার ফলে শিক্ষার্থীর বিরাট একটি অংশ বিদেশে না গিয়ে দেশেই অধ্যয়ন করছে। ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মদ্রারও সাশ্রয় হচ্ছে।
যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে। অধিকন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিনা বেতনে এবং মেধাবী, দরিদ্র ও অন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রকার টিউশন ওয়েভারসহ স্বল্প ব্যয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিয়ে থাকে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অর্জিত সামান্য আয় যা থাকে তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক উন্নয়নসহ ক্যাম্পাস নির্মাণে ব্যয় হয়ে থাকে। তার ওপর সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর শতকরা ১৫ ভাগ করপোরেট ট্যাক্সের বিধান রেখেছে।
উল্লেখ্য, এর পূর্বেও সরকার ২০১০ সালে শিক্ষার ওপর শতকরা ৪.৫ হারে ভ্যাট আরোপ করেছিল কিন্তু ছাত্রদের প্রবল আন্দোলনের ফলে তা অল্পদিনের মধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এমএস